Saturday, November 19, 2016

খুউব সম্ভবত একটি অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস সিলেকশন!

Jackie (2016)— ''A Psychodrama Of Hypnotic Intimacy'' . পলিটিক্স যদি কোনো মুদ্রা হয় তবে তার আরেক পিঠ হচ্ছে প্রপাগান্ডা। আর আমেরিকানরা সিনেমার মাধ্যমে সেই প্রপাগান্ডাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। প্রপাগান্ডা দিয়ে গেঁথেছে অসংখ্য FOOL এর মালা এবং সেগুলো বেশ ভালোভাবেই রপ্তানি হচ্ছে সারা বিশ্বময়। শোভা পাচ্ছে সিনেমা থিয়েটারে বা টরেন্টে। আমরা অনেকে সে মালা আনন্দের সাথেই গলায় দিই, কেউবা শুধু ঘ্রাণ নিয়েই রেখে দেয়। সে মালার নতুন এডিশন জ্যাকি। . জ্যাকলিন কেনেডি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্ট লেডি। সেদেশের ৩৫তম রাষ্ট্রপতি জন এফ কেনেডি'র স্ত্রী। কন্ট্রোভার্শাল অ্যাসাসিনেশনে কেনেডি নিহত হবার পর তার স্ত্রী জ্যাকলিনের পরবর্তী জীবনের বায়োপিক জ্যাকি। .
নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ন্যাটালি পোর্টম্যান। ব্ল্যাক সোয়ানের দুর্দান্ত পার্ফরম্যান্সের পর থেকে যেনো তাকে আর খুঁজেই পাওয়া যায়নি, নিজ ক্যালিবার আর ক্যারিয়ার কোনোটার প্রতিই সুবিচার করেননি বলা যায়। জ্যাকির মাধ্যমে হয়তো তার প্রত্যাবর্তনের সেই ইঙ্গিত দিচ্ছেন, অন্তত ট্রেলার দেখে তাই মনে হলো। মেইবি টু আর্লি টু কমেন্ট, বাট আগামী অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের নমিনেশন বাগিয়ে নেবার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি। অস্কারকে এখানে কিছুর একক ধরা হচ্ছেনা। যেহেতু তাদের মুভি দেখি তাই তাদের কাজ নিয়ে তাদের নিজেদের মূল্যায়নকে এড়িয়ে যেতে চাচ্ছিনা। প্রপাগান্ডায় আগ্রহ না থাকতে পারে তবে ন্যাটালি পোর্টম্যানে যে আগ্রহের বিন্দুমাত্র কমতি নেই। অন্যতম প্রিয় অভিনেত্রী বলে কথা! . থিয়েটারে মুক্তি পাচ্ছে আগামী ২ ডিসেম্বর। ট্রেলার লিংক— https://youtu.be/g9pW3B8Ycc4


আদর্শ, মুখোশ কিংবা একটি চলচ্চিত্র!


এরিস্টটল বলেছিলেন, মানুষ নাকি একটি রাজনৈতিক প্রাণী। তাহলে একবার চিন্তা করুন তো সে প্রানীটি কতটুকু অসহায় হলে টয়লেট টিস্যুতে আত্মজীবনী লিখে যায়?

গাই ফকস্
সে প্রসঙ্গে পরে আসছি, তার আগে ১৬ শ' শতক থেকে কিছু জেনে আসতে হবে। তৎকালীন ইউরোপের ধর্ম এবং রাজনীতি পারস্পরিক সাংঘর্ষিক ছিলো। মূলত ইংল্যান্ড, স্পেন আর ফ্রান্স ছিলো খ্রিস্ট ধর্মের রোমান ক্যাথলিক শাখার প্রধান ধর্ম গুরু পোপ বিরোধী। তবে সমাজের উঁচুস্তরে রোমান ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্ট দুই জাতের রাজনীতিবিদেরই বিচরণ ছিলো। কিন্তু প্রোটেস্ট্যান্টরা রাণী এলিজাবেথের অনুগ্রহ পাওয়ায়, ক্যাথলিকরা হয়েছে বিতাড়িত। এমনই এক আভ্যন্তরীণ সঙ্কটের মধ্যে ইংল্যান্ডের ক্ষমতায় আসেন স্কটিশ রাজা জেমস্। পারিবারিকভাবে রক্তের সম্পর্ক থাকা ছাড়াও নিঃসন্তান রাণী এলিজাবেথের মনোনীত উত্তরাধিকারী ছিলেন তিনি। অতএব তৎকালীন পার্লামেন্টারি সিস্টেম রইলো প্রোটেস্ট্যান্ট নিয়ন্ত্রণাধীন। তাই ক্যাথলিকরা এটি নিয়ে মোটেই সন্তুষ্ট ছিলোনা।

গানপাউডার প্লট
ক্ষমতার পালাবদল হলো শুধু, ক্যাথলিকদের উপর অত্যাচার অপরিবর্তিতই রইলো। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই, স্পেনের রাজার অধীনে দীর্ঘ সময় যুদ্ধ করা অভিজ্ঞ ক্যাথলিক গাই ফকস্ (Guy Fawkes) এর সহযোগীতায় রাজা জেমস এবং অন্যান্য সদস্যদেরসহ গানপাউডার বিস্ফোরণে তৎকালীন পার্লামেন্টারি সিস্টেম 'হাউজ অফ লর্ডস্' উড়িয়ে দেবার পরিকল্পনা করা হলো। পরিকল্পনাটি ছিলো মূলত রবার্ট ক্যাটসবি এর। ১৬০৪ সালে পরিকল্পনা করা হয়, ১৬০৫ সালের নভেম্বরের ৫ তারিখ এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। অতঃপর পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় ফকস’কে বন্দী করা হলো। এবং ১৬০৬ সালের ৩১শে জানুয়ারি তাকে ঝুলিয়ে দেওয়া হলো ফাঁসিতে। এটিই ইতিহাস বিখ্যাত ৫ই নভেম্বরের গানপাউডার প্লট (Gunpowder Plot) নামে পরিচিত।

ইংল্যান্ডে বনফায়ার নাইট উৎযাপন
এজন্যেই বর্তমানে ইংল্যান্ডে প্রতিবছর ৫ই নভেম্বর বনফায়ার নাইট (Bonfire Night) উৎযাপন করা হয়। যার প্রচলন ঘটে ১৮ শ' শতক থেকে। সাধারনত ছোটো বাচ্চারা বছরের এই দিনে মুখোশ পড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হানা দিয়ে চকোলেট, টাকা-পয়সা সংগ্রহ করে। একই সাথে পুড়ানো হয় আতশবাজি।


ভি ফর ভেন্ডেটা কমিকের প্রচ্ছদ / গাই ফকসের এফিগি
সাধারণত কোনো মুখোশের অন্তরালে মূর্তিসদৃশ ব্যক্তিকে এফিগি (Effigy) বলা হয়। গাই ফকসের মুখায়বের আদলে এই এফিগির জন্ম হয় ১৯৮৮ সালে কমিক আঁকিয়ে ডেভিড লয়েড এবং কমিক লেখক অ্যালান মুর এর 'ভি ফর ভেন্ডেটা' (V for Vendetta) কমিকের মাধ্যমে। সেই কমিক বা গ্রাফিক নোভেল থেকে একই শিরোনামে ২০০৫ সালে চলচ্চিত্রে রুপান্তরিত হয় ভি ফর ভেন্ডেটা। যেখানে দেখানো হয় ২০২০ সালের শেষের দিকে ব্রিটেনে এক ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় আসে। সেই সরকার আইন সম্পূর্ণ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়ে ইচ্ছামতো স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করতে থাকে। ঠিক গাই ফকসের মতো করেই দুর্নীতিগ্রস্থ ব্রিটিশ পার্লামেন্ট উড়িয়ে দেবার প্ল্যান করে সিনেমার প্রটাগনিস্ট ভি (V)।


সিনেমায় ব্রিটিশ হাইকোর্ট উড়িয়ে দেবার সময় ফায়ারওয়ার্ক্সে 'V' সাইনকে ইঙ্গিত করা একটি দৃশ্য
এখানে V for Vendetta দিয়ে শুধুই প্রাতিহিংসাকে ইঙ্গিত করা হয়নি, এখানে V একটি আদর্শের প্রতীক। রোমান ভাষায় V অর্থ ৫, যা ৫ই নভেম্বরের ইঙ্গিত দেয়। শুধু তা-ই নয়, সিনেমাটিতে V'কে যে কারাগার কক্ষে রাখা হয় তার নাম্বারও ছিলো পাঁচ। সিনেমার ক্লাইম্যাক্সে 'কেঁচিগেইটের' একটি দৃশ্য রেয়েছে যেখানে গেইটের ডিজাইনও V এর ইঙ্গিত বহন করে। এমনকি বিশেষ দৃশ্যে ব্যাকরাউন্ড স্কোরে ব্যবহার করা হয়েছে বিটোভেনের 'ফিফথ্' সিম্ফোনি। সিনেমার শুরুতে ব্রিটিশ হাইকোর্ট উড়িয়ে দেবার সময় যে ফায়ারওয়ার্ক্স দেখানো হয়, সেখানেও V দৃশ্যমান। সিনেমার ডায়লগেও V এর উপস্থিতি উল্লেখ্য; Vi Veri Veniversum Vivus Vici অর্থাৎ ''By the power of the truth, I, while living, have conquered the universe.''
ডমিনোতে টোকা দিয়ে দেখানো গুরুত্বপূর্ণ মেটাফোরিক দৃশ্য
সিনেমায় ডমিনো চিপসের একটি দুর্দান্ত মেটাফোর রয়েছে। যেটাতে ২২,০০০ ডমিনোজ ব্যবহার করা হয়েছে। ৪ জন প্রফেশনাল ডমিনো এসেম্বলার মিলে ২০০ ঘন্টা পরিশ্রম করে ডমিনোগুলো সাজিয়েছিলেন। যার সিনেম্যাটিক স্থায়িত্ত্ব ছিলো মাত্র ৩০ সেকেন্ড। ডমিনো চিপস দিয়ে ভঙ্গুর রাষ্ট্র ব্যবস্থাকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। যখন একটা ডমিনোয় টোকা লাগে, পাশেরটিও তার ধাক্কায় পড়ে যায়; এটাই হচ্ছে বিপ্লব। এভাবে ২১,৯৯৯ ডমিনোজ পড়ে যায়, কিন্তু একটি ডমিনো ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। ঠিক V এর মতন। তবে এই দৃশ্যটির আরেকটি ব্যাখ্যা রয়েছে। সিনেমায় V চরিত্রটি সবকিছু পরিকল্পনা মতো করে, কিন্তু পার্লামেন্ট উড়িয়ে দেবার ব্যাপারটা জনগনের উপর ছেড়ে দেয়। “A domino beyond his control, and which he will not allow his plan to force, to topple in either way. He balances his plan, so as to leave that choice to the people.’’ এখানে শেষে দাঁড়ানো সেই ডমিনোটাই হচ্ছে জনগনের ইচ্ছে।

V চরিত্রে হুগো ওয়েভিং
সিনেমাটির সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হচ্ছে এর স্ক্রিপ্ট এবং ডায়লগ; যা আপনার ভোকাবুলারি এবং আদর্শে নতুন কিছু শব্দ যোগ করবে। প্রোটাগনিস্ট V এর চরিত্রে মাত্রাতিরিক্ত দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন হুগো ওয়েভিং; সাথে ছিলো তার ঐশ্বরিক কন্ঠ। পার্শ্ব চরিত্রে ন্যাটালি পোর্টম্যান ছিলেন অনবদ্য। সিনেমাটি দুর্দান্তভাবে নির্মান করেছেন জেমস্ ম্যাকটিগ। চিত্রনাট্য লিখেছেন ম্যাট্রিক্সের মাধ্যমে চলিচ্চিত্রে সায়েন্স ফিকশনের রেভুলশন ঘটানো ওয়াচস্কি ব্রাদার্স (বর্তমানে ওয়াচস্কি সিস্টার্স)। ৫৪ মিলিয়ন ইউএস ডলার বাজেটে নির্মিত এ সিনেমাটি বক্স অফিসে আয় করেছে ১৩২ মিলিয়ন। ২৭টি নমিনেশনে পুরস্কার জিতেছে ৭টি। ৮ লাখেরও বেশি ভোটে IMDb'তে V for Vendetta এর রেটিং ৮.২ এবং সেরা ২৫০ সিনেমার তালিকায় অবস্থান ১৪৮ তম। রটেন টমাটোতে ফ্রেশনেস ৭৩%, মেটাক্রিটিকে স্কোর ৬২%। এবং আমার দেখা সেরা দশটি সিনেমার একটি। লেখাটি যে প্রসঙ্গে শুরু করেছিলাম, সে প্রসঙ্গ এসেছে এই সিনেমারই একটি দৃশ্যের মাধ্যমে। যার মর্মার্থ বুঝতে হলে আপনার সিনেমাটি দেখতে হবে। আর যারা ইতিমধ্যে দেখে ফেলেছেন তারা আসলেই রাজনৈতিক প্রাণী বটে। আর আমাদের মতো রাজনৈতিক প্রাণীদের জন্যেই তো ভি ফর ভেন্ডেটা একটি কাল্ট ক্লাসিক।

সিনেমার একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ দৃশ্য
'People shouldn't be afraid of their government. Governments should be afraid of their people.' এটি শুধুই রক্ত গরম করে দেয়া ডায়লগবাজি, ডিস্টোপিয়ান বা কল্পিত পলিটিকাল থ্রিলার নয়। গাই ফকসের আদলে V যেনো আমাদের ভেতরকার এক প্রতিবাদী সত্ত্বা। আর 'মোনালিসার মতোই ফকসের রহস্যময় হাস্যোজ্জল মুখের' মুখোশটি যেনো হয়ে উঠেছে বর্তমান অনলাইন/অফলাইন বিপ্লবের শেষ আশ্রয়। বিশ্ববিখ্যাত হ্যাকার গ্রুপ অ্যানোনিমাস (Anonymous) ছাড়াও অনেক অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট এই মুখোশটি ব্যবহার করে থাকেন। নিজ নিরাপত্তার ব্যাপারটি চিন্তা করলে এই মুখোশটি প্রতীকীভাবে বেশ কার্জকর।


Word to live by
মৃত্যুর ৪০০ বছর পরেও গাই ফকস হারিয়ে যায়নি কেনো জানেন? কারণ, একজন মানুষকে হত্য করা যায় কিন্তু তার আদর্শকে নয়। সিনেমার আরেকটি ডায়লগ, ''Beneath this mask there is more than flesh, Beneath this mask there is an idea, Mr. Creedy, and ideas are bulletproof.''

একটি দারুণ চলচ্চিত্র শুধু নিছক বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং বাস্তবতার অন্য এক জগত তৈরি করতে সক্ষম। আর সে জগতে বিচরণ করে নিত্যনতুন সব উপলব্ধির বিকাশ ঘটে নিজের মধ্যে। এখানেই একটি চলচ্চিত্রের সার্থকতা। এই সিনেমাটি চারশো বছরের আদর্শকে ধারণ করেছে। যা এই মনোলগে বিদ্যমান...
Remember, remember! The fifth of November, The Gunpowder treason and plot; I know of no reason Why the Gunpowder treason Should ever be forgot!

Penny Dreadful— “The Blessed Dark”

সিরিজটির একজন সংখ্যালঘু ভক্ত আমি। কারণ সংখ্যাগরিষ্ঠের কাছে ইহা একখানা বোরিং ক্রমিক। ঠিক কি কারণে এই বোরিং সিরিজটি আমার কাছে ইন্টারেস্টিং লেগেছে সেটা যতোটা সংক্ষেপে সম্ভব আইডেন্টিফাই করার চেষ্টা করি। গুগলি উগলি উকশ্ দিয়ে শুরু করি। মানে কিছু তথ্য যেগুলো আপনি গুগলেও পাবেন। পেনি ড্রেডফুল হচ্ছে উনিশ শতকের গপ্পের প্রকাশনা। হিস্টোরিয়ান জুডিথ ফ্ল্যান্ডার্সের মতে, এই বোরিং গপ্পোগুলো সময়ের সাথে ভিক্টোরিয়ান সিটিজেনদের মাঝে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলো। কিন্তু আমরা তো হিলারিয়ান পাবলিক, আমাদের কি আর এসব ভালো লাগবে? ঠিক এখান থেকেই দুটি ভিন্ন পথ ওগো দুই দিকে যাবে বেঁকে। একদিকে বোরিং আপনার, অন্যদিকে ইন্টারেস্টিং আমার। মাঝখানে মোরা দুই সিরিয়ালখোর...

.

লিট্রেচার, ফ্যান্টাসি, হরর, সাইকোলজিকার থ্রিলার, ভায়োলেন্স (ন্যুডিটি অলসো), ডার্ক মিস্ট্রি, সাসপেন্স, ডেমিমন্ড, ফিকশন এবাউট ফেইমাস ফিকশ্যনাল ক্যারেকটার/ফাউল ক্রিয়েচার্স/ভ্যাম্পায়ার্স/ইভিল স্পিরিট/ইম্মরটাল বিস্টস বা ব্ল্যাক ম্যাজিক, এক্সোরসিজম, প্ল্যান চ্যাট এসব সম্পর্কে আগ্রহ আছে কিনা? বা ইভা গ্রীণের প্রতি দূর্বলতা আছে কী? যদি না থেকে থাকে তবে এখানেই থেমে যান, কারণ এখান থেকেই বোরিং হাইওয়ে শুরু। পরে কমেন্টে হেমলকও ঢেলে দিতে পারেন। আর যদি এসবে আগ্রহ থাকে তবে ইন্টারেস্টের ম্যাপ আনলক হলো আপনার জন্য। এবার মিস্টেরিয়াস আইল্যান্ড ভ্রমনের পালা...

.

ধরা যাক, সিরিজটির রোমিও যদি হয় এর স্ক্রিনপ্লে তবে জুলিয়েট হচ্ছে সিনেম্যাটোগ্রাফী আর ট্রাজেডিতে আটকা চরিত্রগুলোর দুর্দান্ত অভিনয়। আর্ট ডিরেকশন যা শুধু এন্ড ক্রেডিটেই সীমাবদ্ধ নয়। ইমাজিনেশনে যে ফ্যান্টাসি আমরা তৈরি করি তারই ভিঞ্চি পোট্রেইট এই সিরিজটি, মেইবি মোর দ্যান দ্যাট। নতুনবা গেইম অফ থ্রোন্সের মতো পাওয়ারফুল সিরিজের এয়ারটাইমে পাল্লা দিয়ে হাজির হতে পারতো না পেনি ড্রেডফুল। ইহা এমনই এক আবহ তৈরি সক্ষম যেখানে গুগলি উগলি উকশ্ হওয়া ছাড়া উপায়ও থাকেনা। ইভা গ্রীণের এক প্ল্যান চ্যাটের দৃশ্যায়ণ নিয়েই বাংলা দ্বিতীয় পত্রের বিশ নাম্বারের রচনা লেখা যাবে। সে যদি সিজনাল ফ্রুট হতো তবে এই সিরিজে তার পার্ফরমেন্স ছিলো একদম ইয়াম্মি কক্টেল জুসের মতোন। ডেভিলের প্রতি এট্রাক্টেড না হয়ে থাকা তো এমনিতেই বেশ কষ্টসাধ্য, তাঁর উপর দ্বিতীয় মৌসুমে অ্যান্টাগনিস্টের ডেভিল ওর্শিপের ডেডিকেশন দেখলে রীতিনীতির খ্যাতা পুড়ে দিয়ে ডার্ক ফোর্স জয়েন করবার ইচ্ছে জাগতেই পারে। ওয়্যারউল্ফ, নাইটকামার, ডক্টার ফ্যাংকেস্টাইন, মিস্টেরিয়াস ডোরিয়ান গ্রে, জ্যাকেল অ্যান্ড হাইড, ভ্যাম্পায়ার কি নেই এখানে। ডার্ক এলিমেন্টখোর হলে তো হ্যাঙ্গওভার হয়ে যাবার কথা...

.

পেনি ড্রেডফুল নিয়ে আমাদের মতো সংখ্যালঘু ভক্তদের এক্সপেরিয়েন্স লিখতে গেলে আরব্য রজনী পার হয়ে যেতে পারে। তাই মাত্র তিন সিজনে ২৭টি এপিসোডের মতো করেই তাড়াহুড়ো করে ইস্তেফা দেবার আগে, ফিনালে আফসোসের রুপকথা নাই বা লিখলাম। যেহেতু পজিটিভ মেন্টালিটি দিয়ে শুরু করেছি, নেগেটিভিটি দিয়ে শেষ করতে ইচ্ছে করছেনা। পেনি ড্রেডফুলের প্রতি এই কয়টা লাইন ডেডিকেট করে আপাতত বিদায় নিচ্ছি— Hello darkness, my old friend. I've come to talk with you again. Because a vision softly creeping, left its seeds while I was sleeping. And the vision that was planted in my brain, still remains within the sound of silence...




Friday, November 18, 2016

'Arrow vs The Flash'

জলপাই রানীর সবুজ তীর!
একটা আস্ত বিলিয়নিয়ার, এক কাপ কাস্ট আওয়ে, ছয় ভাগের এক ভাগ রবিনসন ক্রুসো, আধা চা চামচ রবিন উইলিয়ামস ফ্রম জুমানজি, ২৫০ গ্রাম মিহি কুচি ব্যাটমান, কয়েক কিউব রিভার্স ডেথস্ট্রোক, মাঝখান থেকে চেরা রবিনহুড পরিমান মত এবং এক মুঠো যা ইচ্ছে তাই। এই হলো উপকরণ।
প্রথমেই ধুয়ে রাখা বিলিয়নিয়ারকে ভালো করে মশলা মাখিয়ে মেরিনেট করতে হবে। এরপর ফ্রাই প্যান গরম করে তাতে কাস্ট আওয়ে ছেড়ে দিতে হবে, সাথে রবিন উইলিয়ামস ফ্রম জুমানজিকেও মিশিয়ে দিন। ফুটতে শুরু করলে ভালো মতন কষিয়ে বিলিয়নিয়ারকে সেদ্ধ করুন। ফ্লেভার উঠলে তাতে ডেথস্ট্রোক এবং রবিনহুড ঢেলে দিন। খেয়াল রাখবেন, বিলিয়নিয়ারের সাথে অপর উপকরণগুলো যেনো খুউব ভালোমতন মেখে যায়। তারপর যা ইচ্ছে তাই দিয়ে একটু নেড়েচেড়ে দুর্গন্ধ উঠলে বুঝবেন যে এটা তৈরি। অতঃপর মিহি কুচির ব্যাটমান ছিটিয়ে, তাকে ঘোমটা দিয়ে পরিবেশন করুন।
জনস্বার্থে- কেকা ফেরদৌসি
উল্লেখ্য- অলিভার কুইনকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিলো নর্থ চায়না সি তে, যার কোনো অস্তিত্বই নাই সিরিজ ক্রিয়েটরের ক্রিয়েটিভিটির মতন।



বাড়ি এলেন, দেখলেন, আর টাইমলাইন গুলায় দিলেন!
বাড়ি এলেন। তার উপরে ঠাডা পড়লো। হেরপর থেইকা সে নিজেই এক জীবন্ত ঠাডা। ফরেনসিক এক্সপার্ট হইলেও তার আছে অফুরন্ত সময় আর গোলা ভরা চেতনা। তাই আঞ্জুমান মফিদুলের আম্রিকান শাখা স্টার ল্যাবসের হয়ে টাইম ওয়েস্ট করেন তিনি। ওয়েস্ট দেখে মনে পড়লো, তার আছে আইরিস ওয়েস্ট। টিভি সিরিজ দুনিয়ার সবচাইতে বিরক্তিকর ক্যারেক্টার।
বাড়ির মাঝে বাংলা সিনেমার নায়ক হবার সকল দোষ বিদ্যমান। বাপ্পারাজের মতো ছ্যাকা খাওয়া, ইলিয়াসের মতো সিরিয়াস হয়ে যাওয়া, ওমর সানীর মতো ফ্যাত কইরা কাইন্দা দেয়া আবার জলিলের মতো কমেডি করে শুধু নিজেই তাতে হাসা। সে স্টার ল্যাবসে যেমনে কামলা দেয়, জাস্ট একটা শেলাই মেশিনওয়ালা শাবানা পাইলেই তার ভাগ্যের চাক্কা ঘুরে যাইতো। কষ্ট কইরা আর টাইমলাইন গুলান লাগতো না।
সে তার মায়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে গিয়ে আরেক দুনিয়ার লগে আমগো দুনিয়ার শেয়ারইট কানেক্ট করায় দিছিলো। কিন্তু তাতেও তার মন ভরে নাই। তার মা বাবাকে বাঁচাইতে আবারো টাইমলাইন গুলাইছে। এইটা টাইমলাইন নাকি বাগার দেয়া ডাইল যে বারবার ঘুটা দেয়া লাগে।
এতে কইরা প্রত্যেক সপ্তাহেই নতুন নতুন হালার্পুদের উৎপাত শুরু হয়। আর সে-ই একমাত্র ভাদাইম্মা যে কিনা তাদের থামাইতে পারে। পুরো সিজনে দুষ্টের দমণ করে ফিনালেতে গিয়ে নিজেই বিরাট এক আকাম বান্ধায়া দেয়। আর এভাবেই সে তিনটি মৌসুম কেঁদে হেসে খেলে কাটায় দিচ্ছে। সে হয় বাড়ি, সে হয় ঝলক। এই পোস্ট দেখে কেউ আবার আমারে কইরেন না বলক।

জোকারনামা


জোকার।
সর্বগ্রাসী একটি চরিত্র, যা সত্ত্বার সতীত্ব হনন করতে সক্ষম। ডিসি কমিকের এই সুপারভিলেনের জন্ম ১৯৪০ সালের ২৫শে এপ্রিল। ব্যাটম্যানের ভয়ঙ্কর এই আতংকের জন্ম নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। বেশ কয়েকটি ব্যাকস্টোরি দেয়া হলেও জোকারের ডেফিনিট অরিজিন ডিসি কমিকেও ক্লিয়ার করা হয়নি। এ ব্যাপারে মহামতি জোকার নিজেই বলেন, "Sometimes I remember it one way, sometimes another... if I'm going to have a past, I prefer it to be multiple choice!"
দাবি করা হয়, জোকার চরিত্রটিকে সৃষ্টি করেছেন ৩ জন মিলে। বিল ফিংগার, বব কেইন, জেরি রবিনসন। বব আর জেরি ডিজাইন করেছেন; বিল লিখেছেন। তবে জোকারের জন্ম কিন্তু হয়েছে অন্য একটি চরিত্র দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে। ভিক্টর হুগো'র লেখা রোমান্টিক মেলোড্রামাটিক উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি একই নামের সিনেমা 'দ্যা ম্যান হু লাফস্' (১৯২৮) এর কেন্দ্রীয় চরিত্র 'গুইনপ্লেইন' ভূমিকায় অভিনয় করা 'কনরাড ভেইদ্ট' এর আদলে জোকারকে আঁকা হয়। ১৯৫১ সালের ফেব্রুয়ারীতে, ডিসি কমিকের ডিটেকটিভ সিরিজের ১৬৮ সংখ্যায় দেখানো হয় যে জোকার একজন সাধারন ল্যাবরেটরি ওয়ার্কার। সে তার মালিকের কাছ থেকে মিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করে রিটায়ার করতে চায়। তাই সে মুখোশ পরা সন্ত্রাসী সেজে 'রেড হুড' নামে ক্রাইম করতে গেলে ব্যাটম্যানের কাছে ধরা পড়ে। এবং ঘটোনাক্রমে কেমিকাল ওয়েস্ট এর ভিতর ডুবে গিয়ে সাদা চামড়া, লাল ঠোঁট, সবুজ চুলের হয়ে যায় এবং মুখবিকৃতি হয়ে বিদ্রূপহাস্যে পরিণত হয়। এই হচ্ছে এখন পর্যন্ত দেখানো জোকারের সর্বোচ্চ উৎপত্তি।
সেল্যুলয়েডে জোকারের পথচলা শুরু হয় ১৯৬৬ সালের ব্যাটম্যান মুভিতে সিজার রমেরো'র হাত ধরে। এরপর ১৯৮৯ সালের ব্যাটম্যান মুভিতে জোকার হাল ধরেন লিজেন্ড জ্যাক নিকলসন। অতঃপর ২০০৮ সালে ক্রিস্টোফার নোলানের দ্যা ডার্ক নাইটে জোকারের ভূমিকায় অভিনয় করে নিজেকে লিজেন্ডের পর্যায়ে নিয়ে যান হিথ লেজার। ২০১৬ তে এসে জোকারের প্রত্যাবর্তন ঘটান মেধাবী অভিনেতা জ্যারেড ল্যাটো। এছাড়া এনিমেইটেড সিরিজ এবং ভিডিও গেইমসে জোকারের চরিত্রে কন্ঠ দিয়েছেন মার্ক হ্যামিল।
বলা বাহুল্য, জ্যাক নিকেলসনের জোকার ছিলো একদম কমিক বুক থেকে উঠে আসা জোকার। কমিক বুক অনুযায়ী, বেষ্ট জোকার। আর হিথ লেজারের জোকার ছিলো ইম্প্রোভাইসড, এবং সে জোকার নিজেকে এক আলাদা পর্যায়ে নিয়ে গেছে। সুইসাইড স্কোয়াডের জোকার ডিজাস্টার দেখার পর মনে হচ্ছে, কেউ আর হয়তো হিথ লেজারের জোকারের উচ্চতায় পৌছুতে পারবেনা। জ্যাক নিকলসনের সাথে হিথ লেজারের তুলনা করাটা হচ্ছে বোকামী। তুলনা করতে হলে পুরো ফিল্মোগ্রাফী টানতে হবে। যেখানে হিথের ক্যারিয়ার শুরু হবার আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে এখানে মজার ব্যাপার হচ্ছে, নিকলসন যখন জোকারের চরিত্রে রুপদান করেন তখন তার ক্যারিয়ার অলরেডি লিজেন্ডারি আর হিথ লেজার জোকার চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে লিজেন্ডারি বানিয়েছেন। জোকারের জন্য লিটারেলি প্রাণ দিয়ে গিয়েছেন এই অভিনেতা। মাসের পর মাস একা একটি মোটেলে থাকা, নিজেকে চরিত্রের সাথে একদম মিশিয়ে ফেলা, মেথড এক্টিং এর একদম রফাদফা করে দেয়া। জোকারের মেকআপ নিজে করা, ক্লোজ শটগুলা নিজে নেয়া, বলতে গেলে জোকার চরিত্রটা নোলানের কাছ থেকে ছিনতাই করে নিজের মতো পরিচালনা করেছেন। তার ফলাফলস্বরূপ, ২০০৮ সাল থেকে জোকার এর অর্থই বদলে দেন তিনি। এটা যে সর্বগ্রাসী চরিত্র সেটা নিয়ে আগেই তাকে সাবধান করেছিলেন সিনিয়র নিকলসন। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি, দ্যা ডার্ক নাইটের এডিটিং চলাকালে প্রেস্ক্রাইবড ড্রাগ ইন্টক্সিকেশনের কারণে কার্ডিয়াক এরেষ্টে মারা যান। এখানে আবারো বলা বাহুল্য, সেল্যুলয়েডের ইতিহাসে হিথ লেজারই প্রথম অভিনেতা যিনি কোনো কমিকবুক চরিত্রে অভিনয় করে অস্কার জয়লাভ করেন। তবে আফসোস, এই পাহাড়সম জনপ্রিয়তা দেখে যেতে পারেননি। হিথ লেজার আর জ্যারেড ল্যাটো নিয়ে কথা বলতে গেলে একটা ব্যাপারে বলতেই হয়। হিথ জোকার হয়ে অস্কার জিতেছে, আর ল্যাটো অস্কার জিতে এসে তবে জোকার হয়েছে। হ্যাঁ, অস্কারকে এখানে কিছুর একক ধরা হচ্ছেনা। যেহেতু তাদের মুভি দেখি তাই তাদের কাজ নিয়ে তাদের নিজেদের মূল্যায়নকে উপেক্ষা করার উপায় নেই। তবে জ্যারেড ল্যাটো জোকারের প্রতি একদমই সুবিধে করতে পারেননি, তাকে স্রেফ পাড়ার সেই পাতি মাস্তানের মতো লেগেছে যে কিনা ফ্যাশন ডিজাষ্টার হয়ে মেয়েদের পিছনে ঘুরতেই বেশি পছন্দ করে। যদিও তার চরিত্রটি ক্যামিও ছিলো, সেক্ষেত্রে স্যার এন্থনি হপকিস্নের রেফারেন্স দিতে হয়। ১৯৯১ সালে সাইলেন্স অফ দ্যা ল্যাম্বস্ মুভিতে হানিবল লেক্টারের ভূমিকায় পর্দায় অল্প কিছুক্ষণের উপস্থিতি এতটাই প্রভাব ফেলেছিলো যে অস্কার তো জিতেছিলেনই, সাথে চরিত্রটিকে নিজের সম্পত্তি বানিয়ে ছেড়েছিলেন। সুতরাং বাজে স্ক্রিপ্ট বা এডিটিং যাই হোক না কেন, জনাব জ্যারেড ল্যাটো আপতত ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে জোকার হয়েই রইবেন, অন্তত আমার কাছে।
সোজা বাংলায় জোকার আসলে মানসিক বিকারগ্রস্থ। তবে ছোটবেলায় ব্যাটম্যানকে ভালো লাগলেও, বড় হবার সাথে সাথে এই বিকারগ্রস্থের কথাবার্তাই বেশি সেন্স মেইক করতে লাগলো। হয়তো ইটস্ নট এবাউট মানি, ইটস্ এবাউট সেন্ডিং আ ম্যাসেজ। আর তার ম্যাসেজগুলোয় ইনফ্লুয়েন্সড হয়ে নিজের অজান্তেই কিভাবে যেনো জোকারভক্ত হয়ে গেলাম। ইভেন দ্যা ডার্ক নাইটেও চাচ্ছিলাম ব্যাটম্যান হেরে যাক। একটা সময় ছিলো, যখন আমার আইডিতে আমার চাইতে জোকারের ছবি বেশি ছিলো। এমনকি প্রোফাইল পিকচারেও জোকার ঝুলতো বেশিরভাগ সময়। আইডি পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু জোকারের প্রতি আসক্তি এখনো বিন্দুমাত্র কমেনি। ২০০৪ সাল থেকে নিয়মিত মুভি দেখি, শুধু দেখি বললে ভুল হবে মুভি খাই আমি। সাইকোপ্যাথ, গ্যাংস্টার, ক্লাউন প্রিন্স বা এইজেন্ট অফ ক্যাওয়াস... যা-ই হোক না কেনো এই এক যুগে জোকার চরিত্রটার মতো করে কেউ কখনো প্রভাব ফেলতে পারেনি, কখনো পারবেওনা বোধ হয়। উইথ ডিউ রিস্পেক্ট টু জ্যাক নিকলসন'স জোকার... সরি- জ্যারেড ল্যাটো ইজ নট মাই জোকার, হিথ লেজার ইজ অ্যান্ড অলওয়েজ উইল বি! :)